স্বদেশ ডেস্ক:
ভারতের নয়াদিল্লি থেকে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা খালি হাতে ফিরে আসলে জনগণ তাকে ক্ষমা করবে না বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা জয়নুল আবদিন ফারুক। আজ শুক্রবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের উদ্যোগে বাংলাদেশের মাটির ওপর দিয়ে ভারতের রেল লাইন স্থাপন পরিকল্পনার প্রতিবাদে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদে সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।
জাতীয় সংসদের সাবেক বিরোধীদলীয় চিফ হুইপ জয়নুল আবদিন ফারুক বলেন, ‘এই সরকারের সঙ্গে জনগণের কোনো সম্পর্ক নাই, বরং বাংলাদেশের জনগণ তারেক রহমানের সঙ্গে আছে। তার প্রমাণ ৭ জানুয়ারির নির্বাচন, তার প্রমাণ চার ধাপে উপজেলা নির্বাচন। এসব নির্বাচনে কোনো মানুষ ভোটকেন্দ্রে যায় নাই।’
তিনি বলেন, ‘ভাইয়ে ভাইয়ে নির্বাচন দিয়ে ডামি নির্বাচনের সেই সরকারপ্রধান আজকে আবার দিল্লি যাচ্ছেন। কী নিয়ে আসবেন আমরা দেখব। এবার খালি হাতে আসলে কিন্তু জনগণ আপনাকে ক্ষমা করবে না। রাজনৈতিকভাবে আপনার বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।’
ভারতীয় আগ্রাসনের বিরুদ্ধে সোচ্চার হওয়ার আহ্বান জানিয়ে বিএনপির এই নেতা বলেন, ‘বাংলাদেশের মানুষ বলা শুরু করেছে, ভারত তুমি বন্ধু থাকো। কিন্তু বন্ধু বলে আজকে আমাদের সব কিছু কেড়ে নিয়ে যাবে। আমার পানির ন্যায্য হিস্যা থেকে আমাদের বঞ্চিত করবে? বাংলাদেশের জনগণ গরীব হতে পারে কিন্তু আত্মমর্যাদা অনেক বড়। তাই আপনাদের (ভারত) জানিয়ে দিতে চাই, বাংলাদেশের নদ-নদীর পানির ন্যায্য হিস্যা দিতেই হবে।’
ইউরোপীয় ইউনিয়নসহ বিভিন্ন দেশে ভারতীয় বহু পণ্যে ক্যানসার সৃষ্টিকারী রাসায়নিক পদার্থে উপস্থিতির শনাক্ত হওয়ায় তা নিষিদ্ধ করা হয়েছে উল্লেখ করে ভারতের উদ্দেশে ফারুক বলেন, ‘আপনারা বাংলাদেশের ওপর দিয়ে রেললাইন নির্মাণ করবেন আর সেই রেলে করে ক্যানসার নমুনা পাওয়া এমন সব পণ্য সামগ্রী অন্য প্রান্তে নিয়ে যাবেন- তা কখনো বাংলাদেশের মানুষ গ্রহণ করবেন না।’
তিনি বলেন, ‘১৯৭১-এর সালে আমরা হাফ প্যান্টে পড়ে যুদ্ধ করে দেশ স্বাধীন করার মধ্যে দিয়ে পিণ্ডির (পাকিস্তানের রাওয়ালপিণ্ডি) পিঞ্জির ভেঙে চুরমার করে দিয়েছি। তাই বলে আবার আমরা দিল্লির আগ্রাসন মেনে নেব? বাংলাদেশের মানুষ তা কখনো জীবন থাকতে গ্রহণ করবে না। আসুন সব ভেদাভেদ ভুলে গিয়ে বাংলাদেশে ভারতের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে শরিক হই।’
অভিযোগ করে সাবেক সংসদ সদস্য ফারুক বলেন, ‘বাংলাদেশে আজকে যে রাজনৈতিক সংকট তৈরি হয়েছে এই সরকারের সৃষ্টি।এই সরকার লুটেরাদের সরকার, দুর্নীতিবাজদের সরকার। এই ভারতপ্রীতির সরকারের বিরুদ্ধে জাতীয়বাদী নাগরিক পরিষদকে আমি আহ্বান জানাব, আমাদের জীবন থাকতেও তাদের এসব অন্যায়-অত্যাচার গ্রহণ করা হবে না।’
তিনি বলেন, ‘তারেক রহমানকে মিথ্যা মামলায় সাজা দিয়ে দেশের বাইরে রাখতে পারেন, খালেদা জিয়াকে জেলে রাখতে পারেন কিন্তু বাংলাদেশের মানুষ আন্দোলনের ব্যর্থ হয় নাই। কিছু সংখ্যক আমলা, কিছু সংখ্যক পুলিশ কর্মকর্তা যারা বাংলাদেশে আজকে অন্যায়ভাবে বিরোধীদলকে দমন করার কাজে নিয়োজিত। তার প্রমাণ আজিজ, বেনজীর, আসাদুজ্জামান মিয়া। এই আজিজ-বেনজীর-আসাদুজ্জামান মিয়া আপনারা এখন কোথায়?’
ফারুক বলেন, ‘পুরো সিলেটে বন্যায় লাখ লাখ মানুষ চরম দুর্ভোগে দিন কাটাচ্ছে। কাউকে খুশি করার জন্য কিশোরগঞ্জের মিঠাইমইন-অষ্টগ্রাম সড়ক নির্মাণ করে বাংলাদেশের অগণিত মানুষকে আজকে পানিতে ডুবিয়ে দিচ্ছে, এক ব্যক্তিকে খুশি করার জন্য এই সড়ক বা বাঁধ সিলেটের মানুষের জন্য উপহাস হয়ে পড়েছে।’
জাতীয়তাবাদী নাগরিক পরিষদের সভাপতি মাইনুল ইসলাম বাদল তালুকদারের সভাপতিত্বে সমাবেশে আরও বক্তব্য দেন বিএনপির আবদুস সালাম আজাদ, আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ, মুসলিম লীগের শেখ জুলফিকার বুলবুল চৌধুরী প্রমুখ।